শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০২:১৯ অপরাহ্ন

ঘোষনা :
  সম্পূর্ণ আইন বিষয়ক  দেশের প্রথম দৈনিক পত্রিকা   দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল এর  পক্ষ থেকে সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা   । 
সংবাদ শিরোনাম :
স্বেচ্ছায় যৌনকর্ম করা কী অপরাধ? মা দিবসে মায়েদের নিয়ে ইবি রোটার‍্যাক্ট ক্লাবের ক্রীড়া ও ফল উৎসব নারী শিশু আইনে মিথ্যা মামলায় জামিন ও মুক্তির উপায়! ইবিতে ‘প্লান্ট সাইন্স’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনার  শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিনিময় করবে ইবি এবং তুরস্কের ইগদির বিশ্ববিদ্যালয় চেকের মামলায় সাফাই সাক্ষী বনাম আসামীর নির্দোষিতা! খোকসার জনগনের সাথে ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল আখতার। খোকসার জনগনের সাথে ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল আখতার। কুমারখালীতে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত। ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের নিকট দোষস্বীকারে সাক্ষ্যগত মূল্য বনাম বাস্তবতা!
কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ অরুপ গোস্বামী’র সাথে মতবিনিময়

কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ অরুপ গোস্বামী’র সাথে মতবিনিময়

 

সিরাজ প্রামাণিকঃ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, চৌকি’র উদ্যোগে বিজ্ঞ আইনজীবী, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিজিবি’র সাথে শনিবার এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের মধ্যমনি ছিলেন কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ জনাব অরুপ কুমার গোস্বামী। তিনি উপস্থিত সব শ্রেণী পেশার মানুষের উক্ত আদালতের সুবিধা, অসুবিধা ও নানা সমস্যা সম্বলিত বক্তব্য অত্যন্ত ধৈর্য্যরে সাথে শ্রবণ করেন এবং সাধ্য অনুযায়ী সমাধান করবেন বলে তিনি তার বক্তব্য প্রকাশ করেন।
২০১২ সালে ফৌজদারী আইন সংশোধন করে জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে যেসব উপজেলা রয়েছে সেসব উপজেলায় দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়। তার মধ্যে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা অন্যতম হওয়ায় ২০১২ সালে নভেম্বর মাসে ৩ হাজার ৬শ’ দেওয়ানী মামলা নিয়ে দেওয়ানি আদালত দৌলতপুরে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু কোন এক অদৃশ্য কারণে গত ৬ বছরেও ফৌজদারী আদালত স্থানান্তর হয়নি। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ ও নির্দেশের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শণ করে ফৌজদারি আদালত আজও কুষ্টিয়া জেলা শহরেই রয়ে গেছে। ফলে জেলা শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরবর্তী ভারত সীমান্তবর্তী উপজেলার বিচার প্রার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হয়ে আসছে। এ নিয়ে একাধিকবার বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনও হয়েছে; তাতেও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কোন টনক নড়েনি।

গত ২৪ জানুয়ারী’২০১৭ সোমবার সন্ধায় কুষ্টিয়ার তৎকালীন জেলা জজ মো: বারেকুজ্জামান, চিফ জুডিশিয়াল ম্যজিষ্ট্রেট মাহমুদা খাতুনসহ বিভিন্ন আদালতের একাধিক বিচারক দৌলতপুর দেওয়ানী আদালত ও ফৌজদারী আদালতের স্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় দৌলতপুরের সিনিয়র সহকারী জজ মো: ফয়সাল আল মামুন, আইনজীবী, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় এলাকাবাসী অবিলম্বে দৌলতপুরে ফৌজদারী আদালত কুষ্টিয়া থেকে স্থানান্তরের জোর দাবী জানান। কিন্তু আদালত ভবনে সাব-রেজিষ্টার অফিস রয়েছে এ ছুঁতো ধরে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ফাইল চালাচালি শুরু করে।

উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৯ সালে তারাগুনিয়া বাজারের পাশে একটি ভাড়া করা বাড়িতে দৌলতপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয় স্থাপিত হয়। ১৯৮৬ সালের দিকে উপজেলা চত্বরের একটি ভবনে সহকারী জজ আদালতের কার্যক্রম চালু করা হয়। ১৯৯৩ সালের দিকে আদালতটি জেলায় স্থানান্তর করা হয়। যে দুটি কক্ষে আদালতের কার্যক্রম চলত, সেখানে সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয় স্থানান্তর করা হয়। ২০১২ সালে উপজেলা সহকারী জজ আদালত আবার উপজেলা চত্বরে স্থানান্তর করা হয়। সে সময় স্থানীয় সাংসদ আফাজ উদ্দীন আহম্মেদ আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র দিয়ে সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়টিকে নিজের বাড়ির কাছে তারাগুনিয়ার একটি ভাড়াবাড়িতে স্থানান্তর করান। ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি থেকে সেখানে কার্যক্রম শুরু হয়। কার্যালয় স্থানান্তরের প্রতিবাদে খায়রুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি উচ্চ আদালতে রিট করেন। রিটের বিষয়বস্তু হচ্ছে সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসটি যেন উপজেলা সদরেই রয়ে যায়। আদালত ১৬ জানুয়ারি থেকে উপজেলা চত্বরের সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ের ওপর ছয় মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেন। মাঝে দুবার স্থিতাবস্থার মেয়াদ বৃদ্ধি হওয়ায় ২০১৪ সালের ২০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকে। এরপর থেকে ওই রিট বিষয়ে আর কোন হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে বর্তমান স্থানীয় সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরী সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসটি আদালতের রুমগুলো থেকে সরিয়ে অন্যত্র জায়গা নির্ধারন করে দিয়ে ও সেখানে সংস্কার কাজে দুলক্ষ টাকা বরাদ্দ দিলেও সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতি ও অনিচ্ছার কারনে নির্ধারিত জায়গায় স্থানান্তর করা সম্ভব হয়নি।

জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও কুষ্টিয়া জজ কোর্টের তরুণ আইনজীবী হাসানুল হাসকার হাসু জানান, সাধারণ মানুষের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে উপজেলা সদরে দেওয়ানী আদালতের মতো ফৌজদারী আদালতসহ একটি পূর্নাঙ্গ আদালত ব্যবস্থা স্থাপন করা একান্ত প্রয়োজন। এ বিষয়ে তিনি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি বিশেষ সুনজর কামনা করেন।

দৌলতপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন বলেন, ৪৬১ বর্গ কিলোমিটারের বৃহৎ এ উপজেলায় প্রায় ৬ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। এখানকার অধিকাংশ জনগণ দরিদ্র এবং কৃষিজীবী। তাদের পক্ষে জেলা সদরে গিয়ে বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমা পরিচালনা করা অত্যন্ত ব্যয় বহুল ও কষ্টসাধ্য। সেকারণ বর্তমান সরকার সাধারণ মানুষের ভোগান্তি লাঘবে ফৌজদারী কার্যবিধি সংশোধন করে দৌলতপুরে আদালত স্থানান্তরের নির্দেশ দিলেও শুধুমাত্র সাব-রেজিষ্টার অফিসের একটি স্বার্থান্বেষী মহলের কারনে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না।

এই সংবাদ টি সবার সাথে শেয়ার করুন




দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল.কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।  © All rights reserved © 2018 dainikinternational.com
Design & Developed BY Anamul Rasel